Monday, November 23rd, 2015




বিপিএলর ২য় দিনে এক রানে চট্রগ্রামের নাটকীয় জয়

rangpur-riders_11735

ক্রিড়া প্রতিবেদক,নারায়ণগঞ্জ প্রতিদিন ডট কম : সাসপেন্স, ক্লাইম্যাক্স, অ্যান্টি ক্লাইম্যাক্স এবং সবশেষে রহস্য-উন্মোচন। একসময় হলিউডে এই ছিল হিচককের ছবির সহজ ফর্মুলা। সোমবার বিপিএল তিনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম ম্যাচে সব রসদই মজুদ ছিল। এই না হল টি ২০ ম্যাচ। শেষ ১২ বলে সিলেটের দরকার ২০ রান। অধিনায়ক মুশফিকুর ৩৪ রানে অপরাজিত। শেষ ছয় বলে ৯ রান। টি ২০তে কোনো ব্যাপার? মুশফিক ৪৪*। মিরপুরে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে। সেখান থেকে দুই বলে ৭। এক বলে ৩ রান। লড়াইটা মোহাম্মদ আমির বনাম মুশফিকুরের। চিটাগাং ভাইকিংসের পাকিস্তানি পেসার আমিরের অফ-স্টাম্পের বাইরের ফুলিশ লেন্থের বল মুশফিক কভারে ঠেলে এক রান নিলেন। আরেকটি শেষ বলের ফিনিশিংয়ে চিটাগাং ভাইকিংস জিতল এক রানে। তামিম ইকবালের প্রথম জয়ই মুশফিকের প্রথম হার। ৫০ পূর্ণ করা সিলেট অধিনায়ক অপরাজিত রইলেন। পরাজিত হল তার দল। ব্যাট-বলের এই রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের আগে কাল অন্য নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে মিরপুরে। ইংল্যান্ড বোর্ডের অনাপত্তিপত্র না থাকায় সিলেটের দুই ব্রিটিশ ক্রিকেটার খেলানো নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৭০ মিনিট পর শুরু হয় ম্যাচ। নিয়ম ভেঙে চারজনের জায়গায় দুজন বিদেশী নিয়েই সিলেটকে খেলার অনুমতি দেয় বিপিএলের টেকনিক্যাল কমিটি। বিপিএলের উদ্বোধনী দিন চার উইকেট নিয়েও চিটাগাংকে জেতাতে পারেননি আমির। কাল চার ওভারে ১৯ রান দিয়ে উইকটেশূন্য আমিরই জেতালেন তামিমদের। অদ্ভুত না টি ২০! সিলেটের শুরুটা হয়েছিল কিন্তু আশাজাগানিয়া। একাদশ মাঠে নামাতেই যাদের গলদঘর্ম হতে হয়েছিল, চার বিদেশীর বদলে দুজনকে নিয়েই যাদের প্রথম এগারো সাজাতে হয়, সপ্তম ওভারে ১/৬৬ ছিল তারা। স্বপ্নের বীজ বপন করেছিলেন শ্রীলংকান ওপেনার দিলশান মুনাবিরা। স্বদেশী দিলশানের (তিলকারত্নে) এক ওভারে ছয় চার মেরে সিলেট সুপার স্টার্সকে চনমনে করে তুলেছিলেন মুনাবিরা। অষ্টম ওভারে মাত্র ৩০ বলে ৬৪ (স্ট্রাইক রেট ২১৩.৩৩) করে তিনি যখন সাঈদ আজমলের ঘূর্ণির শিকার হন, সিলেট তখন ২/৭৬। এরপর হাল ধরেছিলেন সুপার স্টার্সের সুপারস্টার মুশফিকুর। গতবার দুরন্ত রাজশাহীর হয়ে খেলা বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়কের ৩৪ বলে হার না-মানা ৫০ শেষতক আক্ষেপের কারণ হয়ে রইল সিলেটের জন্য। আর মাত্র দুটি রান পেলেই তো সিলেট শুরুটা করতে পারত জয় দিয়ে। কিন্তু টি ২০-র চরিত্র এমনই যে, এখানে ঘন ঘন মোড় বদল হয়। গন্তব্যের কাছে পৌঁছে দেখা যায়, পথ শেষই হয়নি।

 ১৮১ তাড়া করতে নামা সিলেট ১৭৯/৬-এ থেমে এ বার্তাই দিল যে, ক্রিকেটের ক্ষুদে ফরম্যাট আগাথা ক্রিস্টির রহস্যোপন্যাসের চেয়েও দুর্ভেদ্য। ২০ বলে ৩২ রান করা সিলেটের নুরুল হাসানও নিশ্চয় সাজঘরে ফিরে এ কথাই ভেবেছেন। চিটাগাং বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল জাতীয় দলে অনিয়িমত হয়ে পড়া পেসার শফিউল ইসলাম (৩/২৫)। দুটি উইকেট নিয়ে পরের স্থানে রয়েছেন পাকিস্তান দল থেকে নির্বাসিত স্পিনার সাঈদ আজমল।
 চিটাগাং ভাইকিংস আজ টানা তৃতীয় ম্যাচ খেলবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেট সুপার স্টার্সের প্রতিপক্ষ বরিশাল বুলস।
 বিপিএল শুরুর আগে তামিম ইকবাল বলেছিলেন, দেশীরাই হবেন চিটাগাং ভাইকিংসের ভরসা। দ্বিতীয় ম্যাচে দেখা গেল, তামিমের কথাই সত্যি। নিজে টানা দ্বিতীয় অর্ধশতকের ইনিংস খেললেন। এদিন টি ২০তে অভিষিক্ত ভাইকিংসের ইয়াসির আলীও অধিনায়ককে অনুসরণ করে পেলেন ফিফটি। চট্টগ্রামের দলটি ১৮০ রানের পুঁজি গড়ে মূলত এ দুজনের হাফ সেঞ্চুরিতে। প্রথম ম্যাচে ৫১ রান করা চিটাগাং ভাইকিংসের আইকন খেলোয়াড় তামিম ৪৫ বলে ৬৯ রান করেন। একেবারে টি ২০ মেজাজের ব্যাটিং। তার ইনিংসের শোভা বাড়ায় ছয়টি চার এবং চারটি ছয়। দুই ম্যাচে তামিমের রান হল ১২০।
 ওয়ানডাউনে ব্যাট করতে নামা ইয়াসির আলী সুযোগ পেয়েই নিজের সামর্থ্যরে স্বাক্ষর রেখেছেন। একটিমাত্র চার এবং চারটি ছয়ে ৫২ বলে তার ৬৩ রানের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে শেষ বলে। চট্টগ্রামের হয়ে এবারের জাতীয় লীগে ছয় ম্যাচে ৫১.৪২ গড়ে ৩৬০ রান করা ১৯ বছর বয়সী এই ডান-হাতি ব্যাটসম্যান ভাইকিংসের তুরুপের তাস হওয়ার আভাস দিচ্ছেন। তামিম ও ইয়াসিরের ফিফটির অনেকটাই দূরে রয়েছেন শ্রীলংকান অলরাউন্ডার জীবন মেন্ডিস। তার অবদান ১১ বলে ২০। দুটি ছয়। কোনো চার নেই। তার চেয়েও বড় অবদান জিয়াউর রহমানের। ১৪টি টি ২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা এই ডান-হাতি ব্যাটসম্যান ইনিংসের লেজে সাত বলে অপরাজিত ১৫ রানের ধামাকা ব্যাটিং করেছেন। স্ট্রাইক রেট ২১৪.২৮। শ্রীলংকার তিলকারত্নে দিলশান যারপরনাই হতাশ করেছেন। এক বল স্থায়ী ইনিংসে তার রানের ভাণ্ডার যে শূন্য, সেকথা কি বলার প্রয়োজন আছে? একটি করে উইকেট নেন সিলেটের চার বোলার। তাদের মধ্যে শুভাশীষ রায়ই সবচেয়ে কম খরুচে (১/২২

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category