সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামীকাল শনিবার বিকালে দেশে ফিরছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন এ কথা জানান। তাকে স্বাগত জানাতে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় ওই দিন দলীয় নেতাকর্মীদের বড় ধরনের জমায়েতের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
রিপন বলেন, দেশের ক্রান্তিকাল বিবেচনা করে, সংকট বিবেচনা করে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার চিকিৎসা সম্পন্ন না করেই দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি (খালেদা জিয়া) ২১ নভেম্বর বিকাল ৫টায় অ্যামিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে দেশে প্রত্যাবর্তন করবেন, ইনশাআল্লাহ।
এদিকে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিএনপি ও তার অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ উপলক্ষে ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন তৈরি শেষ পর্যায়ে। আগামীকাল দুপুর থেকে দলের কেন্দ্রীয় নেতা ছাড়াও রাজধানীর আশপাশের নেতাকর্মীদের বিমানবন্দর এলাকায় সমবেত হতে দলের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় যুগান্তরকে বলেন, আমাদের দলের চেয়ারপারসন আসবেন, আর নেতাকর্মীরা তাকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে যাবেন না, এটা তো হতে পারে না। আশা করছি, ওই দিন বিমানবন্দর এলাকায় বিএনপির চেয়ারপারসনকে স্বাগত জানাতে বিভিন্ন স্তরের অসংখ্য নেতাকর্মী ও সমর্থক শান্তিপূর্ণভাবে উপস্থিত থাকবেন। আমরাও নেতাকর্মীদের বিমানবন্দরে থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যান খালেদা জিয়া। সেখানে যাওয়ার পর থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে তার দেশে ফেরা নিয়ে নানা আলোচনা চলে। ক্ষমতাসীন দলের কোনো কোনো নেতা বলতে থাকেন, খালেদা জিয়া আর দেশে না-ও ফিরতে পারেন। এরই মধ্যে দেশে ফেরার উদ্দেশে কয়েকবার বিমানের টিকিট বুকিং দেয়া হলেও পরে তা বাতিল করা হয়। এতে করে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বক্তব্য খানিকটা বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠতে শুরু করে। তার দেশে ফেরা নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যেও ধোঁয়াশা দেখা দেয়। বিশেষ করে বারবার তারিখ পরিবর্তনে এই ধোঁয়াশা আরও বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় আনুষ্ঠানিকভাবে খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ঘোষণা দেয়ায় সব সংশয়ের অবসান ঘটল বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, দুই মাসের বেশি সময় ধরে লন্ডনে অবস্থানকালে শুধু চিকিৎসা নয়, দল পুনর্গঠনের পরিকল্পনা, দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ইত্যাদি নিয়ে সেখানে অবস্থানরত বড় ছেলে ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তার বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এই সফরে দল পুনর্গঠনসহ নানা বিষয়ে সিদ্ধান্তও হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়া দেশে ফেরার পরপরই দলের পুনর্গঠন সিদ্ধান্ত গতি পাবে। বিশেষ করে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও জেলা কমিটি পুনর্গঠন নিয়ে কার্যক্রম ত্বরান্বিত হবে।
এ বিষয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান যুগান্তরকে বলেন, আমরা আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে জমা দিয়েছি। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি জেলা কমিটিও জমা দিয়েছি। আশা করছি, ম্যাডাম দেশে ফিরলে এসব বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত হবে।
এদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। আগামী ২৬ নভেম্বর দুই মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।
Leave a Reply