Monday, November 30th, 2015




সারাদেশে একদিনে দুই ডজন মৃত্যুদন্ডাদেশ আদালতের

 বিশেষ প্রতিবেদক,নারায়ণগঞ্জ প্রতিদিন ডট কম : দেশের পাঁচটি জেলায় একদিনে অন্তত ২৪ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
hang_pic_15944 সোমবার গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, চট্টগ্রাম ও কুষ্টিয়া জেলার স্থানীয় আদালত আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে সর্বোচ্চ দেন।
 প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর অনুযায়ী, গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জালালউদ্দিন হত্যার দায়ে ১১ জন, নারায়ণগঞ্জে স্কুলছাত্র রাকিবুল হাসান ইমনসহ দুই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৫ জন, চট্টগ্রামে সিএনজি অটোরিকশার চালক হত্যায় ৪ জন, সিলেটে স্কুলছাত্র আবু সাঈদ হত্যায় ৩ জন এবং কুষ্টিয়ায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হত্যায় স্বামীকে ফাঁসির দণ্ড দেয়া হয়।

গাজীপুরে ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড
 গাজীপুরের কাপাসিয়ায় থানা যুবলীগের সভাপতি জালাল হত্যা মামলায় বিএনপির ১১ নেতাকর্মীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে এলাহী ভূইয়া। একই সঙ্গে আসামিদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
 মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কাপাসিয়া থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন, যুবদলের থানা সদস্য জজ মিয়া, থানা ছাত্রদলের সদস্য আল-আমিন, বিএনপি নেতা বেলায়েত হোসেন বেল্টু, থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হালিম ফকির, কাপাসিয়া কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জুয়েল, থানা যুবদলের সদস্য মাহবুবুর রহমান রিপন, থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি আ. আলীম, বিএনপি নেতা আতাউর, ফরহাদ ও জয়নাল।
 গত ২০০৩ সালের ১৭ আগস্ট গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার পাবুর বলখেলা বাজারের উত্তর পাশে থানা যুবলীগ সভাপতি জালাল সরকারকে হত্যার ১২ বছর পর এ রায় ঘোষণা করা হলো।

 নারায়ণগঞ্জে ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড
 নারায়ণগঞ্জের বন্দরে নবম শ্রেনীর ছাত্র রাকিবুল হাসান ইমন হত্যা মামলার রায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলো- শাহজাহান আলী জীবন, সাইদুর রহমান, জামাল ও তোফাজ্জল হোসেন। এদের মধ্যে সাইদুর ও তোফাজ্জল পলাতক রয়েছেন।
 বন্দর কামতাল মালিভিটা এলাকার প্রবাসী নুরু মিয়ার স্কুল পড়ুয়া ছেলে রাকিবুল হাসান ইমনকে ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি অপহরণ করে দণ্ডিত আসামিরা। মুক্তিপন না পেয়ে ইমনকে হত্যা করা হয়। পরে ৬ মার্চ অর্থাৎ ৩৪ দিনপর একই এলাকার একটি মুরগীর খামারের পাশ থেকে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
 এদিকে, একই জেলায় প্রেমিকা ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে দেলোয়ার হোসেন (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দেলোয়ার হোসেন ঢাকা ডেমরার সুকুসী এলাকার সুরুজ মিয়ার ছেলে।
 ডেমরা সুকুসী থেকে প্রেমিক দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী সোনিয়া আক্তার সাজেদা ২০০৮ সালের ২৯ আগস্ট সকালে বেড়াতে যায়। পরে নারায়ণগঞ্জ শহরের একটি আবাসিক হোটেলে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে দেলোয়ার পালিয়ে যায়।

চট্টগ্রামে ৪ জনের ফাঁসি
ট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে ইউসুফ নামে এক সিএনজি অটোরিকশা চালককে খুনের দায়ে চারজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলায় দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশও দেয়া হয়েছে।
 মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নুরুল আলম, আবুল কালাম, রুবেল ও কাউসার। এদের মধ্যে কাউসার ছাড়া সবাই পলাতক। আর যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, আরিফুল ইসলাম ও নঈম উদ্দিন। আরিফুল ইসলাম পলাতক রয়েছে।
 জানা গেছে, ২০০৮ সালের ৩ মে ইউসুফের অটোরিকশা ভাড়া করেন আসামিরা। পরে সিএনজি অটোরিকশাটি ছিনতাই করে তাকে গলা কেটে হত্যা করে লাশ ফেলে চলে যায়।

 সিলেটে ৩ জনের ফাঁসি
 সিলেটে বহুল আলোচিত শিশু আবু সাঈদ অপহরণ ও হত্যা মামলায় পুলিশ কনস্টেবলসহ তিনজনের ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। এছাড়া একজনকে খালাস দেয়া হয়েছে।
 ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সিলেটের বিমানবন্দর থানার বহিস্কৃত কনস্টেবল এবাদুর রহমান পুতুল, সিলেট জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাকিব ও র‌্যাবের কথিত সোর্স আতাউর রহমান গেদা।
 অপহরণ ও হত্যা মামলায় পৃথক ধারায় তাদের ডাবল মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। খালাস দেয়া হয় ওলামা লীগ নেতা মাহিব হোসেন মাসুমকে।
 মাত্র আট কার্যদিবসেই শেষ হয়েছে মামলার বিচারকার্য। নবম কার্যদিবসে দেয়া হয়েছে রায়। গত ১৭ নভেম্বর চার্জ গঠনের মাধ্যমে শিশু সাঈদ হত্যা মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।

 কুষ্টিয়ায় স্বামীর ফাঁসি
 জেলার দৌলতপুর উপজেলায় নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী লাইলী খাতুনকে হত্যার দায়ে স্বামী রোকন মন্ডলকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।
 সরকারি পিপি মামলার বিবরণে জানান, ২০১১ সালের ২৬ আগস্ট দৌলতপুর উপজেলার কামাল পুরের নাজিরপুর গ্রামের হুলি মন্ডলের ছেলে ভ্যানচালক রোকন মন্ডল জুয়া খেলে টাকা হেরে বাড়িতে ফিরে অন্তঃসত্বা স্ত্রী লাইলী খাতুনের সাথে বাকবিতণ্ডতায় জড়িয়ে পড়েন।
 তিনি জানান, রাত ৯টার পরে রোকন স্ত্রী লাইলী খাতুনকে বাড়ির পাশে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ ড্রেনে ফেলে দেন। দুই দিন পরে ওই ড্রেন থেকে লাইলীর গলিত লাশ উদ্ধার হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category