Sunday, November 29th, 2015




অধিকতর তদন্তের জন্য হাইকোর্টে বিউটির আবেদন

001
বিশেষ প্রতিবেদক,নারায়ণগঞ্জ প্রতিদিন ডট কম : প্রায় দেড় বছর পর শুরু হতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার বিচারিক কার্যক্রম। সোমবার (৩০ নভেম্বর) জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েতুর রহমানের আদালতে নিহত আইনজীবী চন্দন সরকার হত্যা মামলার বিচার কাজ শুরু হবে।
এদিন আদালতে মামলার গ্রেফতারকৃত প্রধান আসামী নূর হোসেন, র‌্যাব-১১’র চাকুরীচ্যুত সিইও লে.কর্ণেল তারেক মোহাম্মদ সাঈদসহ ২৩ আসামী কে আদালতে হাজির করা হবে।
সাত খুনের ঘটনায় দুটি মামলায় আদালতে চার্জশীট দাখিলের পর একটির বাদী নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি নারাজী আবেদন করেন। যা প্রথমে নিন্ম আদালত, পরবর্তীতে জেলা ও দায়রা জজ আদালত খারিজ করে দেন। আর গত ৯ নভেম্বর জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আশেক ইমামের আদালত ৩০ অক্টোবর আইনজীবী চন্দন সরকার হত্যা মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু করার জন্য জেলা জজ আদালতে প্রেরন করেন।
এব্যাপারে আইনজীবী চন্দন সরকার হত্যা মামলার বাদী জামাতা বিজয় সরকারের আইনজীবী এড. সাখাওয়াত হোসেন টাইমস নারায়ণগঞ্জকে জানান, ৩০ অক্টোবর জেলা জজ আদালতে চন্দন সরকার হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হবে। এছাড়াও নিন্ম আদালতে প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম হত্যা মামলায় আসামীরা হাজিরা দিবেন।
অপরদিকে, সাত খুনের ঘটনায় অধিকতর তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি।
রোববার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের বেঞ্চে এ আবেদনের শুনানী অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার আদালত পরবর্তী শুনানীর জন্য দিন ধার্য্য করেছেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মনিরুজ্জামান কবির ও বিউটির আবেদনের পক্ষে শুনানী করেন অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ।
মন্টু ঘোষ জানান, নজরুলের স্ত্রী বিউটির করা মামলায় ৩৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দেওয়া হয়েছে। যেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ পড়েছে। আমরা বিচারিক আদালতে এ বিষয়ে আবেদন করলে তা খারিজ করে দেওয়া হয়। তাই গত সোমবার হাইকোর্টে এ আবেদন করা হয়।
উল্লেখ্য, চলতি বছর ৮ এপ্রিল দীর্ঘ ১১ মাস ৭ দিন পর নারায়ণগঞ্জ আদালতে আলোচিত ৭ খুনের দুটি মামলার মামলার চার্জশীট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মামুনুর রশীদ মন্ডল।
দুই মামলায় ১৬ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে র‌্যাবের ৩ কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে আসামী করা হয়। এতে ১২৭ জন কে স্বাক্ষী করে ১৬ জনকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এরপর আইনজীবী চন্দন সরকার হত্যা মামলার বাদী জামাতা বিজয় সরকার চার্জশীটের ব্যাপারে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের মামলা থেকে ৫ আসামীকে অব্যাহতি দেয়ার কারনে চার্জশীটের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজী রিভিউশ করেন একটি মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি। যা আদালত খারিজ করে দিলে উচ্চ আদালতে পুনরায় নারাজী আবেদনের সিদ্ধান্ত নেন বিউটি।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজন অপহৃত হন। ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরের দিন আরও একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
অপহরণের পরপরই নজরুলের পরিবারের পক্ষ থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামী করে একটি মামলা করা হয়।
সাত খুনের দুটি মামলায় এ পর্যন্ত র‌্যাবের ১৭ সদস্যসহ মোট ৩২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছ। এর মধ্যে র‌্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক মোহাম্মদ সাঈদ, উপ-অধিনায়ক মেজর আরিফ হোসেন, লে. কমান্ডার এম এম রানাসহ র‌্যাবের ১৯ জন সদস্য রয়েছেন। বাকী ১১ জন মামলার প্রধান সন্দেহভাজন আসামী নূর হোসেনের ঘনিষ্ঠ ও বেতনভুক্ত কর্মচারী। সম্প্রতি ভারত থেকে মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে আনেন সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category