কূটনৈতিক প্রতিবেদক : ভারতের সঙ্গে অভিন্ন নদী সংযোগ ও পানির ন্যায্য হিস্যা বুঝে পেতে এবং নৌপথে চোরাচালান রোধে বাংলাদেশ-ভারত নৌসচিব পর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়েছে।
সোমবার থেকে ভারতের রাজধানী দিল্লীতে এ বৈঠক শুরু হয়েছে। তিন দিনব্যাপী সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের নৌপথ ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য পরিবহনের চার্জ নির্ধারণ হতে পারে এ বৈঠকে। এমনটিই নিশ্চিত করেছে পররাষ্ট্র ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র।
বাংলাদেশের ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব শফিক আলম মেহেদী।
এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র রাইজিংবিডিকে জানিয়েছে, এবারের নৌসচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিস্তা চুক্তি নিয়ে ভারতের ইতিবাচক মনোভাবের পাশাপাশি কবে নাগাদ চুক্তিটি স্বাক্ষরের সম্ভবনা রয়েছে সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে।
বৈঠকে অংশ নেওয়ার আগেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ট্রানজিট চার্জ নির্ধারণের একটি খসড়া প্রস্তুত করে নেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রতি টন ভারতীয় পণ্যের জন্য ১৩৯ টাকা নির্ধারণ করার কথা জানা গেছে। এ ছাড়া পুলিশ পাহাড়া নিলে টন প্রতি অতিরিক্ত আরো ৫০ টাকা গুণতে হবে। যদিও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআরের) পক্ষ থেকে ট্রানজিট মাসুল বা চার্জ ৫০০ টাকার বেশি করার প্রস্তাব করা হয়েছিল।
নৌ সচিবের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন- প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক সুব্রত রায় মৈত্র, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাসির আরিফ মাহমুদ, মংলা বন্দরের সদস্য (অপারেশনাল) মোহাম্মদ আলতাফ হোসেন, আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সাঈদ আহমেদ, সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ও জাহাজ জরিপকারক ফখরুল ইসলাম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মো. মনোয়ার হোসেন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. সাইফুল ইসলাম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য সুলতান মো. ইকবাল, চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল ম্যানেজার এনামুল করিম, বিআইডব্লিউটিএয়ের পরিচালক মো. শফিকুল হক এবং গালফ অরিয়েন্ট সিউজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মাহফুজ হামিদ।
বৈঠকে তিস্তার পাশাপাশি প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেডের (পিআইডব্লিউটিটি) আওতায় বাংলাদেশ-ভারত নৌ-প্রটোকল রুটে আশুগঞ্জ নৌবন্দরকে ট্রান্সশিপমেন্ট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করে ট্রানজিট সংক্রান্ত সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ, কোস্টাল শিপিং চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) স্বাক্ষর, নৌ-প্রটোকল রুটের নাব্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় বাংলাদেশ, ভারত ও ভূটানের আর্থিক দায়-দায়িত্ব ও করণীয়, চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার সংক্রান্ত প্রটোকল অনুস্বাক্ষর এবং বাংলাদেশে ও ভারতের মধ্যে যাত্রী ও পর্যটকবাহী নৌযান চলাচল সংক্রান্ত খসড়া সমঝোতা স্মারকপত্র নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, এ বছরের ২০-২৩ এপ্রিল নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ-ভারত নৌসচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিনিধিদল আগামী ১৯ নভেম্বর দেশে ফিরবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
Leave a Reply